লেখালেখির শুরু

আমি লেখালেখিতে অনেক খারাপ। খারাপ বলতে আসলেই খারাপ। সেই ক্লাস ওয়ান থেকে এখন পর্যন্ত। লেখালেখি যেখানেই আছে , সেখানেই আমার পারফরমেন্স বেদনাদায়ক। আমি এতে একটুও হতাশ নই। কারন আমি কথায় আবার অনেকটা পটু। মানুষকে অনেক মজা দিতে পারি, মোটিভেট বা ইন্সফায়ার বা ডিসকারেজ, হাসাতে  সবই পারি কথা দিয়ে।  আমার মা রাগ করলে হাসাতে পারি, রাগ ভাঙাতে পারি এই কথা দিয়ে, এই লেখা দিয়ে নয়। তাই এই আমি লেখালেখি নিয়ে একটু উদাসী। শুধু বানান ভুল হয় আর ভাবের পরিপূর্ণ প্রকাশ হয় না।  কেমনে কেমনে যানি ম্যাট্রিক , ইন্টারে  বাংলা ,ইংরেজীতে  এ্ মাইনাস পেয়েছি, আমার জানা নাই। অনেক কষ্ট করেছি এ প্লাস পাবার কিন্তু পাই নি। আমি হতাশ নই। আসল পড়াশোনা শুরু করলাম ২০০৮ থেকে রসায়ন বিষয় নিয়ে। খুব ভালো যে, বুঝতাম  একেবারেই তা নয় । তবে সার ক্লাসে যা বুঝাতেন, তা মনে হয় অনেকটাই বুঝতাম কিন্তু সমস্যা আমার ওই লেখাতেই। যা বুঝতাম আমি আর তা লিখতে পারতাম না ঠিক মতো । তাই অনার্সের প্রথম ২ বছরের ফলাফল খুবই খারাপ। তাই ভাবলাম লেখালেখির দক্ষতাটা বাড়ানো দরকার ভেবে বেশ কয়েক মাস ঢাকা ব্রিটিশ কাউন্সিল আর সাইফুর্সে কাটালাম। কিন্তু লেখালেখি  না করে কথা বলার দক্ষতাটাই বাড়লো , এতে করে পাল্লার একদিক ভারী থেকে আরো ভারী হলো আরেক দিকে খালি থেকে আরো খালি হলো।  অনার্সের শেষ দুই বছর  ফলাফল আরো খারাপ হলো। লেখালেখি নিয়ে সর্বশেষ ধাক্কাটা খেলাম  আমেরিকায় মাষ্টার্স থিসিস লেখার সময়। প্রায় ২০০ পাতা লেখা । আমার প্রফেসর মনে হয় বুজতে পারলেন, আমি যে লেখায় খুব খারাপ। কারন প্রথম যখন একটা গবেষনা প্রবন্ধ প্রকাশ করার জন্য উনাকে আমার গবেষনা কাজের খসড়া লিখে জমা দেই, উনি বললেন, your writing is very poor । তারপর আমাকে কয়েক দিন ট্রেনিং দিলেন কিভাবে লিখতে  হয় তা নিয়ে। কিন্তু তিনি যে, ট্রেনিংদিলেন  তা তো গবেষনা প্রবন্ধ লেখার জন্য, সাহিত্যের  বা ডায়েরী লিখার জন্য না। তাই গাধা গাধাই থেকে গেলাম। আবার আসি সেই থিসিস প্রসংগে । আমার মাষ্টার থিসিসের এ্কজন কমিটি মেম্বার ছিলের যার পিএইচডি ছিল University of Wisconsin, Madison  ।পুরো থিসিস লিখে যখন উনার কাছে যাই, উনি তখন খুবই দ্রুত প্রথম থেকে শেষ পাতা অবধি দেখে বললেন, আমি পেপারে সাইন করবো না যদি না তুমি এসব সংশোধন না  করো। তারপর টানা ২০-২২ দিন চোখে কোন ঘুম নাই।  তবে কষ্ট করেছি  কিন্তু শিখেছি ওই প্রফেসরের কাছে।  এই ভাবে পার করে দিলাম মাষ্টার্স। এবার আসলে খারাপ লেখার জন্য আমাকে ভুগতে হচ্ছে। পিএইচডি প্রথম বছর। লেখালেখিতে আমি খারাপ জানি। তবে ফেল করবো কখানো ভাবি নি। পিএইডি লাইফে প্রথম পরীক্ষাই ফেল। টানা ৫-৬ টা ফেল। এই ভাবে শুরু হয় আমার ফেলের গল্প। যাই হোক , লেখালেখি নিয়ে এত কিছু লিখলাম , কারন আমি ভাবছি নিজের ভাবনা গুলোকে ব্লগে লেখবো, পুরান ডাইরির লেখা গুলো ব্লগে স্থানান্তর করবো। কারন ১০-১২ বছরের আগের বাংলাদেশী নিউজপ্রিন্টের ডায়েরীর অনেকগুলো পাতাই ছিড়ে গেছে, জোড়াতালি দিয়ে রাখলাম । আর পারছিনা। নিজের লেখাটা আর বোঝা যাচ্ছে না। তাই ব্লগে ট্রান্সফার করবো লেখা গুলো। তবে এই ব্লগটা শুধুই আমার এইটা কোন পাবলিক সাইট না। আমি কাউকে রেফারও করি যে আমার সাইট টা পড়ো।  নিজের মনে কথাগুলো ই  অপটু ভাষায় লেখবো এখানে। 

Comments

Popular posts from this blog

Statement of Purpose এর নমুনা-13 ( Analytical Chemistry)

Statement of Purpose এর নমুনা-১ ( Organic Chemistry)

আমেরিকার যে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডিতে এপ্লাই করতে জিআরই লাগে না, তার প্রাথমিক তালিকা_১ :