Summer of 17-পার্ডুভিলেজ চাষাবাদ আপডেট(শনিবার) -১

যান্ত্রিকতার আবহে মাটি থেকে বহু দূরে অনেক দিন থেকে। বহু দিনের ভাবনা, ব্যস্ততার ফাঁকে একটু চাষবাষ করি, মূলা-ডুল্লা-ঝাল মরিচ আর লাল টমেটো চাষ করি। নিজের গাছের চালকুমড়া খাই, বেগুন পাড়ি। নিজের গাছের ফুলকপি খাই, বেগুন খাই। আমেরিকায় এফ-১ ভিসা কাঁধে নিয়ে যেখানে ঘর গুছানোই বড় দায় সেখানে এমন চিন্তা বেমানান। কিন্তু সেখানে এমন সুযোগ পার্ডু ছাড়া আর কে দিবে। পার্ডু ভিলেজের রেসিডেন্ট ছাত্রদের ৪০ টাকা দামে জমি কট দেয় তিন মাসের জন্য। সামারে ব্যস্ততা কিঞ্চিৎ কম হওয়া সাহস করে ল্যাবমেটের সাথে নিলাম একখানা প্লট। এমন অনেকেই অনেক আগ্রহ নিয়ে নিলেও পরে ব্যস্ততায় আর মাঠে ঢুঁ মেরে যাবার সুযোগ পায় না। অবশেষে তিন মাস শেষে শুধু ঘাঁস পরিষ্কার করে পার্ডুকে ফেরত দেয়। আমার জমিনটাও সেই দিকেই যাচ্ছিলো।
আমার প্রফেসরের স্ত্রী, বয়স ৫০+। সামারে মনে হয় ব্যস্ততা কম। কোনভাবে শুনেছে আমরা দুজন জমি নিয়েছি সবজি করবো বলে। আমাদের সাথে চাষাবাদে যোগ দিতে তাঁর খুব আগ্রহ। শুক্রবারে ল্যাব থেকে আমায় নিয়ে এলেন জমি দেখতে। ১০-১৫ মিনিটে তাঁর পরিকল্পনা একে ফেললেন। আমার থেকে সময় নিলেন; কখন তুমি ফ্রি-শনিবার বিকাল ৫ টা থেকে সর্বোচ্চ ৭ টা। সেদিনই মাঠের কোন জায়গায় কোন ফসল হবে তার ম্যাপ করেছেন, বীজ কিনেছেন।
আজ ৫ টার আগেই প্রফেসর সহ দুজনই মাঠে ছোট একটা ট্রাক্টর সহ গাড়িভর্তি যন্ত্রপাতি নিয়ে হাজির। আমি আর প্রফেসর দুজন মিলে জমিতে ট্রাক্টর চালালাম-আর নিড়ালাম আর প্রফেসরের স্ত্রী বীজ বুনলেন। নিচের ছবিতে ক্যামেরার চোখ বিস্তৃত পুরোটা আমার জমি একথা আমি বলছিনা। ১৪বি-জমির নাম্বার-মাঠের শতাধিক প্লটের একটি, প্রায় ৩০০ বর্গফুট।
ভাবছিলাম বহুদিন পরে আজ মাটি ধরবো, বীজ বুনবো, হাত পা কাদা দিয়ে ভরে যাবে। একটুও হয়নি-এমনটা আমি চাইনি। সেখানে ও যন্ত্র। তারা কাজ শুরু করার আগেই আমায় গ্লাবস পরিয়ে নিয়েছে। খুটি লাগানোর জন্য লোহার বড় বড়ো যন্ত্রপাতি নিয়ে এসেছে গাড়ি ভর্তি করে। জমির চারপাশে সীমানা দিয়েছে। হাঁটু গেড়ে মাঠে বসার জন্য নিয়ে এসেছে ক্রিকেটারদের মতো প্যাড। মাটিতে শুয়ে পড়লেও গায়ে মাটি লাগার কোন উপায় নাই। কোন সারিতে ই গাছ তা বোঝার জন্য আছে ছোট ছোট লাল পতাকা যাতে লেখা গাছের নাম। এমন ছোট ছোট যন্ত্রপাতি আমাদের দেশে প্রান্তিক কৃষকের হাতের নাগালে থাকলে দেশের সর্বত্র কৃষি বিপ্লব ঘটে যেতো। অবশেষে কাল রবিবার আবারো ১ ঘন্টা ৫ টা থেকে ৬ টা, এরপর কবে আবার যাওয়া হবে কেউ জানে না।
অবশেষে বাসায় ফিরে এসে-আম্মার ফোন,
কিরে বাবা কিআরছ?
আম্মা ক্ষেত কোবাই আইসলাম ?
কি-কছ ? ক্ষেত কোবাইছস? কি ক্ষেত--
অতপর.......












Comments

Popular posts from this blog

Statement of Purpose এর নমুনা-13 ( Analytical Chemistry)

কিভাবে প্রফেসরকে ইমেইল লেখা যায় !! নমুনা !!

Statement of Purpose analysis from UC Berkeley