ফেলময় গ্র্যাজুয়েট স্কুল লাইফ আর নয়!
দেশে থাকতে আমি এক সময় ১০-১২ জোড়া কবুতোর পালতাম। দেশী কবুতোর এক জোড়া দিয়ে শুরু করেছি, ১২ জোড়া পর্যন্ত বাড়লো। খাবারের দরকার হলে আমি বা আম্মা দুজনের গায়ের উপর উড়ে এসে বসতো। বাজারে নতুন বড় বড় সাইজের সিরাজী কবুতোর এলো, শখ করে মৌজা ওয়ালা বিশাল বড় সাইজের সিরাজী কবুতর কিনলাম, বড় করে নিজ হাতে বাসা বানালাম। বেশ ভালোই, কয় মাস পর পর বাচ্ছা দেয়, সব বাচ্ছা গুলো ও স্বাস্থ্যবান, অনেক ভারী। তারপর, আবার বাজারে নতুন জাতের কবুতর এলো, গিরিবাজ কবুতর। একদর পাতলা, শরীরে মাংস নাই, খুব পাতলা। বিশেষ গুণ হলো হাত তালি দিলে আকাশে দীর্ঘক্ষন উড়তে থাকে, প্রজনন হার অনেক কম, তবে সিরাজী কবুতরের মতোই অনেক আপন, খাবারের দরকার হলে গায়ে এসে বসতো, অনেক খাবার খেতো, তাতে কষ্ট ছিল না, আমায় ভালোবাসতো, তাই আমি ও । কমান্ড মানতো, হাত তালি দিলেই অনেক উপরে উড়া শুরু করতো।
পার্ডুতে যখন ভর্তি হই, প্রথম দিনই থেকে আমায় একটা কোড নাম্বার সহ একটা পোষ্ট বক্স দেয়, ঠিক সেই গিরিবাজ কবুতরের বাসার মতো ছোট। পোষ্ট বক্স ৪৭৭, সাথে লেখা ছিলো, "দিস ইজ ইউর আনটিল ইউ আর ডক্টর" । গ্র্যাজুয়েট লাইফের সব সুখ-দুখের খবর আসে এই বক্সে। বিশেষ করে মাস শেষে আগ্রহ নিয়ে সোম বারে সবাই চেক করে নিজ নিজ বক্স, খুলেই কেউ হয় খুশী, কেউ হয় অখুশী, কেউ কাউকে বেশী আপন না হলে অখুশী হবার অনুভূতি বলে না।
২০১৫ তে পার্ডু রসায়ন বিভাগের এডমিশন অফার লেটার পেয়ে যতটা খুশী হয়েছিলাম, তার চেয়ে বেশী হয়েছিলাম আতঙ্কিত। কিউমুলেটিভ পরীক্ষার কথা মনে কল্পনা করলেই মনের মধ্যে বজ্রপাতের মতো একটা হুঙ্কার দিয়ে আতঙ্ক কোত্থেকে জানি আসতো, কখনো প্রকাশ করিনি, মূলত সেই থেকে শুরু প্রস্তুতি। মনে সাহস নিয়ে শুরু করলাম। জীবণে ফেল আমেরিকায় আসার আগে একবারো করি নি। আমেরিকায় এসে ড্রাইভিং টেষ্ট থেকে ফেল করা শুরু, আর কিউমুলেটিভ পরীক্ষায় ফেল পেলো আরো ব্যাপকতা। এই পরীক্ষায় সবাই ফেল করে, প্রতি ব্যাচে ২-১ থাকে এক্ট্রাঅরডিনারী, দে ডোন্ট লাইক টু ফেইল।
প্রথম দুবছরে প্রায় ২০ টি পরীক্ষার মধ্যে ৫ বাটি পাশ করলে ক্যানডিডেসী পরীক্ষার জন্য উত্তীর্ণ হয়। এখানে ড্রপ আউট রেট ৩০% । ইনরগানিক- কোন সিলেবাস নাই- যেকোন কোন জায়গা থেকে আসতে পারে- সবাই বলে সোজা, আমি বলি জন্মের কঠিন,৮০-৯০ এ পাশ, আপেক্ষিক ব্যাপার। বায়োক্যাম- আমার আয়ত্মের বাহিরে, পাশ মার্ক- ৬০-৭০, তাও আপেক্ষিক, এনালীটিক্যাল-৭০-৮০, তাও আপেক্ষিক, পিজিক্যাল কেমিষ্ট্রি -আই হেইট ইট,
আর অরগানিক, কেমিষ্ট্রি যা কিছু পারি এইখানেই, মেকানিজম-মাই লাভ। পাশ মার্ক বান্ধা-৫০ এ। মনে হয় সোজা, কিন্তু সবাই বলে কঠিন, আমার কাছে ও কঠিন কিন্তু ফেল করলে ও পড়তে অনেক মজা। মেকানিজম পড়তে গেলে মনে হয় যে, রিয়েকশনে কিছু একটা হয়, অ্যাটাক, ব্যাকএটাক, নিউক্লিউফিলীক, ইলেকট্টোফিলিক, কাপলীং আরো অনেক কিছু, পুশ-এরো মেকানিজম। গুণে গুণে ২০১৫, সেপ্টেম্বর থেকে গত মাস অবধি ১০ টাতে ফেল করেছি, দু:খ নাই, আই ফিল প্রাউড, ফেলে ফেলে অনেক কিছু শিখেছি, সিলেবাস ৭ দিন আগে থাকে Organic Letter, June, July, August- synthetic part- তখন আমি জানতাম আমার কি হবে। এ আমি আগেই ভেবে রেখেছি, তাই কিছু না হলে ও অন্তত স্ট্রেস ম্যানেজম্যান্ট ভালো করে শিখেছি।
এতো চাপের মাঝে দুএকটা পরীক্ষা আবার সকালে ঘুমের জন্য মিস হয়ে গেলো, শেষ পরীক্ষা টা পাশ করলে পাশের খবর বিভাগের প্রধান বন্ধ খামে চিঠি দিয়ে জানায়, আর ফেল করলে খোলা খামে। গত ডিসেম্বর থেকে বদ্ধ একটা খামের আশায় বার বার চেক করি ৪৭৭ নাম্বার পোষ্ট বক্স। অবশেষে ৮০ পাতার Old and Modern Baldwin law review পড়তে গিয়ে ঘুমাইনি কয়েক রাত। সব কদিনের না ঘুমানোর ফলাফল সুদে আসলে হাতে পেলাম একটি বদ্ধ খামে। অবশেষে পাশ করিলাম শেষ পরীক্ষাটিতে , উত্তীর্ণ হলাম ক্যানডিডেসী পরীক্ষার জন্য।
পার্ডুতে যখন ভর্তি হই, প্রথম দিনই থেকে আমায় একটা কোড নাম্বার সহ একটা পোষ্ট বক্স দেয়, ঠিক সেই গিরিবাজ কবুতরের বাসার মতো ছোট। পোষ্ট বক্স ৪৭৭, সাথে লেখা ছিলো, "দিস ইজ ইউর আনটিল ইউ আর ডক্টর" । গ্র্যাজুয়েট লাইফের সব সুখ-দুখের খবর আসে এই বক্সে। বিশেষ করে মাস শেষে আগ্রহ নিয়ে সোম বারে সবাই চেক করে নিজ নিজ বক্স, খুলেই কেউ হয় খুশী, কেউ হয় অখুশী, কেউ কাউকে বেশী আপন না হলে অখুশী হবার অনুভূতি বলে না।
২০১৫ তে পার্ডু রসায়ন বিভাগের এডমিশন অফার লেটার পেয়ে যতটা খুশী হয়েছিলাম, তার চেয়ে বেশী হয়েছিলাম আতঙ্কিত। কিউমুলেটিভ পরীক্ষার কথা মনে কল্পনা করলেই মনের মধ্যে বজ্রপাতের মতো একটা হুঙ্কার দিয়ে আতঙ্ক কোত্থেকে জানি আসতো, কখনো প্রকাশ করিনি, মূলত সেই থেকে শুরু প্রস্তুতি। মনে সাহস নিয়ে শুরু করলাম। জীবণে ফেল আমেরিকায় আসার আগে একবারো করি নি। আমেরিকায় এসে ড্রাইভিং টেষ্ট থেকে ফেল করা শুরু, আর কিউমুলেটিভ পরীক্ষায় ফেল পেলো আরো ব্যাপকতা। এই পরীক্ষায় সবাই ফেল করে, প্রতি ব্যাচে ২-১ থাকে এক্ট্রাঅরডিনারী, দে ডোন্ট লাইক টু ফেইল।
প্রথম দুবছরে প্রায় ২০ টি পরীক্ষার মধ্যে ৫ বাটি পাশ করলে ক্যানডিডেসী পরীক্ষার জন্য উত্তীর্ণ হয়। এখানে ড্রপ আউট রেট ৩০% । ইনরগানিক- কোন সিলেবাস নাই- যেকোন কোন জায়গা থেকে আসতে পারে- সবাই বলে সোজা, আমি বলি জন্মের কঠিন,৮০-৯০ এ পাশ, আপেক্ষিক ব্যাপার। বায়োক্যাম- আমার আয়ত্মের বাহিরে, পাশ মার্ক- ৬০-৭০, তাও আপেক্ষিক, এনালীটিক্যাল-৭০-৮০, তাও আপেক্ষিক, পিজিক্যাল কেমিষ্ট্রি -আই হেইট ইট,
আর অরগানিক, কেমিষ্ট্রি যা কিছু পারি এইখানেই, মেকানিজম-মাই লাভ। পাশ মার্ক বান্ধা-৫০ এ। মনে হয় সোজা, কিন্তু সবাই বলে কঠিন, আমার কাছে ও কঠিন কিন্তু ফেল করলে ও পড়তে অনেক মজা। মেকানিজম পড়তে গেলে মনে হয় যে, রিয়েকশনে কিছু একটা হয়, অ্যাটাক, ব্যাকএটাক, নিউক্লিউফিলীক, ইলেকট্টোফিলিক, কাপলীং আরো অনেক কিছু, পুশ-এরো মেকানিজম। গুণে গুণে ২০১৫, সেপ্টেম্বর থেকে গত মাস অবধি ১০ টাতে ফেল করেছি, দু:খ নাই, আই ফিল প্রাউড, ফেলে ফেলে অনেক কিছু শিখেছি, সিলেবাস ৭ দিন আগে থাকে Organic Letter, June, July, August- synthetic part- তখন আমি জানতাম আমার কি হবে। এ আমি আগেই ভেবে রেখেছি, তাই কিছু না হলে ও অন্তত স্ট্রেস ম্যানেজম্যান্ট ভালো করে শিখেছি।
এতো চাপের মাঝে দুএকটা পরীক্ষা আবার সকালে ঘুমের জন্য মিস হয়ে গেলো, শেষ পরীক্ষা টা পাশ করলে পাশের খবর বিভাগের প্রধান বন্ধ খামে চিঠি দিয়ে জানায়, আর ফেল করলে খোলা খামে। গত ডিসেম্বর থেকে বদ্ধ একটা খামের আশায় বার বার চেক করি ৪৭৭ নাম্বার পোষ্ট বক্স। অবশেষে ৮০ পাতার Old and Modern Baldwin law review পড়তে গিয়ে ঘুমাইনি কয়েক রাত। সব কদিনের না ঘুমানোর ফলাফল সুদে আসলে হাতে পেলাম একটি বদ্ধ খামে। অবশেষে পাশ করিলাম শেষ পরীক্ষাটিতে , উত্তীর্ণ হলাম ক্যানডিডেসী পরীক্ষার জন্য।
Comments
Post a Comment