ছাত্রজীবনের টিউশনি আর প্রতারকের ক্ষপ্পরে তিনবার !

ছাত্রজীবনের টিউশনি আর প্রতারকের ক্ষপ্পরে তিনবার ! ***********************************************************************
বন্ধুদের টিউশনি দেখে খুব ইচ্ছা জাগলো আবার একটা টিউশনি করার। ২ বছরে ৩ টা টিউশনি করেছি আবার মাঝখানে দীর্ঘ বিরতি। ছাত্রজীবনে পড়াশোনার পাশাপাশি গৌরব করার মতো যদি কিছু বলার থাকে তা হলো টিউশনি। কেউ করে শখে, কেউ করে অভাবে, আবার কেউ করে অনুরোধে। অনেক দিন থেকে বন্ধুবান্ধবের কাছে টিউশনি খুজছি, অনুবাদের কাজ ও আগের মতো নাই, পকেটে খরাও কাটছে না, তাই একটা টিউশনি খুব দরকার ছিলো
রইস ভবন!!ফার্মগেইটের সিনেমা হলের পিছনে আমার এক বড় ভাইয়ের অফিস ছিলো। ভাইয়ের অফিসে কথা বলতে বলতে হঠাত এক ভাই আসছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যোসিয়োলোজিতে অনার্স মাষ্টার্স দুটোতে ফাষ্ট ক্লাস ফাষ্ট। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবার অপেক্ষায় !! আমার ভাই ঢা.বি. এর ভাইকে আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে আমাকে একটা টিউশনি দিতে বলেন। এখন যা বলবো, তা শুনে আমি ৭-৮ বছর আগে অবাক হয়েছি, আপনি ৮ বছর পর শুনে ও অবাক হবেন।
তার সারা শরীরে ১০-১২ টা পকেট। একেক পকেটে একেক ফোন নাম্বার। সব ফোন নাম্বার দিয়েই কিছু পত্রিকা টিউশনি চাই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে , আবার কিছু পত্রিকায় টিউটর চাই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া আছে, মানে নিজেই টিউটর, নিজেই গাডিয়ান হয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেন নিয়মিত। প্রতি ১০-১৫-২০ মিনিট পর পর একেকটা কল আসে, কেউ টিউটর নিজে আবার গার্ডিয়ান। গার্ডিয়ান হলেই তার কাছে ৪-৫ দিন টাইম নিয়ে রাখেন. আর সাথে সাথে ওয়েটিং লিষ্টের ছেলের কাছে থেকে ৬০০ টাকা নিয়ে ঢা.বির ভুয়া আইডি কার্ড হাতে দিয়ে পাঠিয়ে দেন টিউটর হিসাবে। টিউশনি স্থায়ী হলে প্রথম মাসের অর্ধেক বেতন তাকে দেবার শর্ত ও জুড়ে দেন। আমার ভাইয়ের সাথে লিঙ্ক থাকায় ১০০ কমে ৫০০ টাকা নিয়ে একটা ভুয়া ঢা.বি. আইডি কার্ড দিয়ে পাঠালেন মিরপুর-২ এর কোন এক বাসায়। গিয়ে দেখি কলিং টিপতেই এক মহিলা বের হয়ে এসে বলে, আপনি কারে চান!! টিউটর বলতে না বলতেই আমাগো টিউটর লাগবো না আপনি যান গা!! দুদিন পরে উনি জাতি গড়ার কারিগর পদে নিয়োগ পাবেন উনি!! জয়েন্ট করে থাকলে ৭-৮ বছরে হয়তো প্রভাষক থেকে প্রফেসরের কাছকাছি কিছু একটা হয়ে গেছেন। কর্ম জীবনে কত বড় মহীয়ান করে তুলবেন কর্মক্ষেত্রকে কিছুটা মালুম করা যায়। কে আমাদের রক্ষা করবে এসব কীটের হাত থেকে !!
এর আগে প্রথম দিকে, বিজ্ঞপ্তি দেখে টিউশন মিডিয়াকে ফোন দিলাম। তাদের হাতে নাকি অসংখ্য টিউশনি, টিউটর নাই। বাস্তবে পুরোটাই বাটপারি। ২৫-২৬ বছর বয়সী একটি মেয়ে এলিপ্যান্ট রোডের কম্পিউটার মার্কেটের তিন তলায় অফিস নিয়েছে আর ৩৫০ টাকা দিয়ে নাম নিবন্ধন করালো। আমি ও বিশ্বাস করে বসলাম আর ৩-৪ সপ্তাহ ধরে অপেক্ষা আর ফোন করতে করতে হঠাৎ অফিসে গিয়ে দেখি আমার মতো অসংখ্য ছেলে টিউশনি দেবে বলে ৩৫০ নিবন্ধন ফি নিয়ে কোম্পানি চম্পট।
আবারো, গ্রীণরোডের কন্সেপ্ট টাওয়ারে পত্রিকার টিউশনির বিজ্ঞপ্তি ধরেই দেবাশীষ চক্রবর্তীকে ফোন দিতেই তিনি বলেন, তুমি চলে আসো, তোমার জন্য টিউশনি রেডি আছে। পূর্বের প্রতারকের কথা বলতে না বলতে তিনি আমার উপর খুব রাগ করলেন, বললেন তুমি জানো আমি একজন শিক্ষক, অতীশ দিপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ পড়ান আর পার্টটাইম টিউশনির ব্যাবসা চালান। আমার বিশ্বাস কয়েক গুণে বেড়ে গিয়ে ৫০০ টাকা দিয়ে আবার নাম নিবন্ধন করালাম। ২ সপ্তাহের মধ্যে কোম্পানি বিলীন।
ঢাকা শহর!! অনেকে বলে ইটখোলা,এখানে নাকি প্রাণ নাই। ওলিতে গলিতে প্রতারকের অভাব নাই। কেউ উপর্যুপরী এসব প্রতারকের ক্ষপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত হয়ে নিজেই আবার প্রতারক হয়ে বেড়ে উঠে, আবার কেউ গোপনে অশ্রু ঝরায়। এখনো সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক পত্রিকা ফলাও করে এসব প্রতারকরেরা টিউশনি বিজ্ঞপ্তি দেয় আর দারিদ্রতায় জীর্ণশীর্ন অনাহারী অসহায় কতো ছাত্রকে শুষে খায়।
LikeShow more reactions
Comment
11 Comments
Comments
Shafait Masum ঢাকা শহরে জীবনের প্রথম টিউশনি, একমাসে ত্রিশ দিন ই যেতে হতো।ক্লাস, ল্যাব শেষ করে অনেক সময় খাওয়ার সময়ও থাকত না। না খেয়েই চলে যেতাম টিউশনি তে, প্রথম টিউশনি বলে কথা! । শেষে টাকাটাই মেরে দিল।। ওটা কোনদিনই ভুলব না।
Shafiqur Rahman Munnaa amk onk din ghuranor por tuition deya hoise
Companionable Sabbir এখন আগের চাইতে প্রতারনা বেড়ে গেছে
Titon Saha Shuvo বর্তমানে চট্টগ্রামের অবস্থা এর চেয়ে খারাপ। দালালের দল অসহায় ছাত্রদের চুষে খাচ্ছে!! 
Sajjad Hossain Tomar onek experience amar sathe mile jachhe. Amader somoy Nilkhet e erokom onek office chilo.
Xoni Paul টিউটর দের জন্য একটা অনুরোধ, আপনারা অন্যের উপর ডিপেন্ড না করে একটু ক্রিয়েটিভ হন, এনাফ টিউশন পাবেন + হাতে থাকবে ...
Shariful Islam Sharif ভাই, আমি নিজেও টিউশনি করাই সেই ফাস্ট ইয়ার থেকে। কোনোদিন এমন পরিস্থিতিতে পরিনি। অনেক ছোট ভাইকে ফ্রিতে টিউশনি দিয়েছি!! তবে আপনার এক্সপেরিয়েন্স ভুলবার নয়।
Selim Reza vay, amio porsilam akbar...bks a taka pataichilam
Rokanuzzaman Moschus onk kisu sikhlm...thanks vaiya
Golam Sarwar I have similar situation. I taught one of my friends sister. She failed in test exam. I taught her three months. She got letter marks in same subject in SSC exam. But they didn't pay me. I asked them by another friend. They replied that i am not sincere about teaching as a result they do not pay me. I replied why did she get so much mark ? Their replied that she is smart student.
রোকসানা বর্ষা apnr writing oshadharon !!
true scenario of our society 
sotto ta sotto vabe tule dhora tao ekta art !!

Comments

Popular posts from this blog

Statement of Purpose এর নমুনা-13 ( Analytical Chemistry)

কিভাবে প্রফেসরকে ইমেইল লেখা যায় !! নমুনা !!

Statement of Purpose analysis from UC Berkeley