মুহূর্তরা !
সময় শৈশব, কৈশরের পরিমাপ বোঝে না। তার হারিয়ে যাওয়া; শুধু ছড়ানো চিটানো সব সজীব মুহূর্তরা ; যা ছুঁয়ে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে স্বর্ণালী অতীতে।
শৈশবের কনকনে শীতের গভীর রাতে পাকা রাস্তায় ছুটে চলা গাড়ির হর্ণে হঠাৎ ভাঙা ঘুম, ঘুমহীন আলস্যে লেপের তলায় জড়োসড়ো হয়ে থাকা মুহূর্তরা, মায়ের আচল, ভাঙা দেয়ালের প্রাইমারী স্কুল,মসজিদের পিছনে দীঘির পাড়ের মাঠে বিকালের ক্রিকেট খেলা, রাস্তার দিকে ঝুঁকে থাকা মৌচাক বা ভীমরুলের বাসায় ঢিল দেওয়া; সব অনুভূতিগুলো আমার.. আমার… আমার…
এক মধ্যবিত্ত পাঁজরের ফাঁকে, যৌথ সংসারে লেপ্টালেপ্টি করে, একোল-ও-কোলে করে আদরে বড় হওয়া, সেই আলুথালু হাসি, ভাতের থালে বড় মাছের মাথা; সব সুখের মুহূর্তগুলো আমার.. আমার.. আমার…
ঢালাও করে আসা গ্রামের সেই মেলা
আলো! আলো! লাল, নীল, সবুজ! ঝলমল!
আচমকা চোখের কোনায় আবিষ্কার, আরে এই তো আমার, আমার এক টুকরো পৃথিবী; শুধুই আমার, আমার, আমার!!!
শীতের সকালে পুকুরে ধূমধাম ২-৩ ডুবে গোসল সেরে গ্রামের বন্ধুদের সাথে সাদা ড্রেসে এক সাথে স্কুলে যাওয়ার সেই মুহূর্ত গুলো যে আমার..আমার.. আমার..
দুটো হোয়াইটপ্রিন্ট খাতা, নিউজপ্রিন্ট হবে না কিন্তু, একটা লাল, একটা নীল টিপ কলম (ইকোনো ডিএক্স চলবে না, কাল থেকে স্কুলে যেতে দুটাকা বাড়িয়ে দিতে হবে, রিমোট কন্ট্রোল গাড়ি, হাতের বাঁক থেকে বই হারিয়ে যাবার অযুহাতে স্কুল ব্যাগ কিনে দেওয়া; হঠাৎ আগুন হয়ে উঠা স্পর্শহীন দাবিগুলো আজো আমার…. আমার… আমার…
১০ টাকা ইনকামিং কল রেটে ফোন দোকানে বাবার সাথে কথার বলার অধীর আগ্রহে কলের অপেক্ষায় থাকা মুহূর্তগুলো আজো জীবিত। ডাকপিয়নের গলার আওয়াজ শুনে বাবার চিঠির আসায় থাকা মায়ের মুখের খুশীর আমেজ দেখা মুহূর্তগুলো আজো আমার… আমার… আমার…
হঠাৎ কোন সময়ে আপনজন, বন্ধু বা আত্মীয়ের স্মৃতিবিজড়িত প্রশ্ন
-ও তুই, ভালো আছিস?
-ভালো, তো এই অসময়ে ফোন?
-বিরক্ত?
-তোর কি মনে হয়?
-খুব থান্ডা পড়েছে, না রে?
-তোর বীদেশ যাবার কতদূর?
-মনে আছে সেই কেমিস্ট্রি টিউশনির কথা?
-এখনো ষাঁড়ের মতো ঘুমোচ্ছিস, বাসা বাজার করবি কখন?
-তুই এখনো দুপুর একটায় ঘুম থেকে উঠিস, জমিদার?
-কাল বিকেলে তোর চাচীকে একটু ডাক্তারের কাছে নিতে পারবি?
-মাঝে মাঝে আমার ছেলেটার পড়াশোনা একটু চেক করতে পারবি?
- বাবা, কাল একটু সকাল সকাল বাজার আনতে পারবি?
- ভাই, তুই আমার কতো আদরের নাতী জানস?
- আরে বাবা, একটু খোজ ও নেছনা, মাঝে মাঝে একটু আসিছ, বল? আসবি?
- আজ বাহিরে খাইস না, বাসায় তোর সব শখের তরকারি, কটায় আসবি?
…………………………………………………..
প্রশ্ন, প্রশ্ন, প্রশ্নবাণে অবান্তর ঝড়।
-ভালো, তো এই অসময়ে ফোন?
-বিরক্ত?
-তোর কি মনে হয়?
-খুব থান্ডা পড়েছে, না রে?
-তোর বীদেশ যাবার কতদূর?
-মনে আছে সেই কেমিস্ট্রি টিউশনির কথা?
-এখনো ষাঁড়ের মতো ঘুমোচ্ছিস, বাসা বাজার করবি কখন?
-তুই এখনো দুপুর একটায় ঘুম থেকে উঠিস, জমিদার?
-কাল বিকেলে তোর চাচীকে একটু ডাক্তারের কাছে নিতে পারবি?
-মাঝে মাঝে আমার ছেলেটার পড়াশোনা একটু চেক করতে পারবি?
- বাবা, কাল একটু সকাল সকাল বাজার আনতে পারবি?
- ভাই, তুই আমার কতো আদরের নাতী জানস?
- আরে বাবা, একটু খোজ ও নেছনা, মাঝে মাঝে একটু আসিছ, বল? আসবি?
- আজ বাহিরে খাইস না, বাসায় তোর সব শখের তরকারি, কটায় আসবি?
…………………………………………………..
প্রশ্ন, প্রশ্ন, প্রশ্নবাণে অবান্তর ঝড়।
মুহূর্তরা চুপচাপ আজো বেঁচে হৃদয়ের মনিকোঠায়। এই সব মুহূর্তগুলোর সাথে আবার মিশে যেতে ইচ্ছে করে; সব অনুভূতির মুহূর্তগুলো যে শুধুই আমার.. আমার.. আমার।
Comments
Post a Comment