ডিগ্রীটাকে আজ অসম্পূর্ণ লাগছে।
আমার আম্মা, ছেলেমেয়ের পড়াশোনার জন্য তাঁর ত্যাগ-তিতিক্ষার উদাহরণ বিরল। শুধু চাইতেন আমরা যেন বড় হই, তবে বড় হয়ে কি হতে হবে এমন কিছু কখনো বলতেন না। সংসারে একটু একটু অভাব অনটন আমাদের সবাইকে বুঝানোর চেষ্টা করতেন। যখন শলা দিয়ে পিটানো দরকার, তখন ঠিক পিটিয়েছেন, যখন বেতের বাড়ি দরকার তখন ঠিক বেতিয়েছেন, তখন সুন্দর কথা দরকার তখন তাই করতেন। যখন যেই মেডিসিন দরকার তখন সেই মেডিসিন দিয়েছেন।
এমন সময় ছিল যখন রাত ২টা ৩ টা পর্যন্ত পড়তাম, আম্মা কোন কারণ ছাড়াই পাশে এসে বসে থাকতেন, আবার সকালের এলার্ম ঘড়ি হয়ে জাগিয়ে দিতেন। ক্যাম্পাসের বাস কখন কোথা থেকে ছাড়ে, কটায়, কোথায় দাড়াতে হবে, তাঁর জানা ছিল। জাহাঙ্গীরনগর ক্যাম্পাসে চার বছরের একটু বেশী সময় কাটিয়েছি। এত সুন্দর ক্যাম্পাসটিকে দেখার জন্য কত দূরদূরান্ত থেকে লোকজন আসে, অথচ আমি আমার মা-বাবাকে কখনো ঘুরাইনি ক্যাম্পাসে। এমন চিন্তুা ও কখনো করিনি যে, এক বার একটু ঘুরিয়ে আনি ক্যাম্পাস থেকে।
আমার ছোট ভাই Sayem এইবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গ ইউনিটে ৩০০ তম হয়ে একাউন্টিং পেয়েছে। গতকাল তার বিভাগে নবীনবরণ ছিল। আম্মাকে নিয়ে গেছে নবীন বরণে, আর ঘুরিয়েছে ক্যাম্পাস। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঘুরে আম্মা খুব খুশী-আবেগে আপ্লুত। আমি যা পারি নি ৪ বছরে, আমার ভাই তা করেছে প্রথম সপ্তাহে।
জাহাঙ্গীরনগরকে দ্বিতীয় জনমের অাঁতুতঘর দাবি করি, অথচ আম্মাকে ক্যাম্পাস ঘুরাতে পারি নি, তাই জাহাঙ্গীরনগরের ডিগ্রীটাকে আজ অসম্পূর্ণ মনে হয় হঠাত করে।
Comments
Post a Comment