বড় ছেলের কাছে একজন বাবার আকুতি

বড় ছেলের কাছে একজন বাবার আকুতি
আমি বলি, আমি আর আমার বাবা, আমাদের বহু পুরাতন বন্ধুত্ত্ব (Close friend) আবার সেইম এইজ ( Same Age), তবে বাবার বাড়তি ৩০ বছরের সংসার সাগর পাড়ি দেবার অভিজ্ঞতা আছে , আমার যেটা শূণ্য, এটাই দুজনের সবচেয়ে বড় পার্থক্য। এই বন্ধুত্ত্ব পাকাপোক্ত এক দিনে হয় নি। এই পাকাপোক্ত বন্ধুত্ত্বের আগে আমাদের সেকেলে বাপ-ছেলের মতো কিছুদিন সংরক্ষিত সম্পর্ক ছিল। এই সংরক্ষিত সম্পর্ক থেকে বন্ধুত্ত্বে রুপান্তরের পিছনে সবচেয়ে বড় হাত ছিল আমাদের পারিবারিক সংসদের মূল স্পিকার আমার মা।
এইট নাইন থেকে আব্বা নানাভাবে বলতেন তাঁর সাথে ভালোভাবে বন্ধুত্ব করতে। অফার দিতেন স্পিকারেরর মাধ্যমে। স্পিকার আবার নানাভাবে আমার কানে বাজাতেন। উচ্চমাধ্যমিক পাশ না করতেই সরাসরি বন্ধুত্বের অফার। নতুন ডিল হলো। মেট্রিকে এ-প্লাস পাইনি, নো প্রোবলেম, ইন্টারে এ-প্লাস পাইনি, নো প্রোবলেম। উই আর ফ্রেন্ড , বন্ধুত্ত্বের মাঝে আবার এ-প্লাস কি জিনিস। তারপর ও আরেকটি বন্ধুত্ত্বের আবদার, বিশ্ববিদ্যালয়ে ফাষ্ট হওয়া চাই।। তাও হলো না। আব্বাকে খুশী করতে পারলাম না। একে একে কত পরীক্ষা দিলাম। সব পরীক্ষায় আমার দুইটা টার্গেট থাকতো, এক, আমি খুশী, দুই, বাবা খুশী। আমার রেজাল্ট যাই আসতো আমি খুশী থাকলে ও আব্বা খুশী না বুঝতাম। তাতে আমাদের বন্ধুত্ত্বে ফাটল ধরেনি। কথায় আছে না, পুরান রোগী ডাক্তাতের বাপ, কোন ওষুধ খাওয়া লাগবে জানার জন্য ডাক্তারের কাছে যাওয়া লাগেনা।

গত এক বছর থেকে আমাদের বন্ধুত্ত্ব টা খুব জমে উঠেছে। কল দিয়েই, মাষ্টারমশাই তোমার ছাত্ররা কথাবার্তা শোনে তো!!! ধারাবাহিক আবদারের এটি ছিল লেটেষ্ট টা, সংসার নামক রনাঙ্গনের যোদ্ধাদের খাতাই যেন নাম লেখাই। বহু কাকুতি মিনতি করে তার আরজি টা বেশদিন ধরে শোনাচ্ছেন। বাবার নতুন আবদার বিয়া সাদি করার কোন পরিকল্পনা আছে? উপর্যুপুরী একই প্রশ্নে কত বার আর এড়ানো যায়। বাবার মৃদু ঝাড়ি, আমার ২৭ বছর বয়সে তোর মতো নাঈমের জন্ম দিয়ে দিলাম, যৌবন চলে যায় সেই বাপের ছেলে হয়ে ব্যাটা তোর এখনো বিয়ার কোন পরি কল্পনাই নাই।
কদিন আগে আমার প্রফেসরের ৬১ তম জন্মদিনে ছাত্রদের সামনে এক রেষ্টুরেন্টে আইচ কেইক কাটছেন আমার প্রফেসর। হঠাৎ রেষ্টুরেন্টের এক লোক প্রফেসরকে এসে জিজ্ঞাস করলেন, আর ইউ ফিলিং ফরটি? প্রফেসর লজ্জায় লাল!! এত বয়স থাকতে কেন ফরটি বললো কারন খুজে বের করলাম। আমাদের বন্ধুত্ত্ব এখন তুঙ্গে , বাবাকে এই সুযোগে জিজ্ঞাস করলাম পুরুষের দ্বিতীয় যৌবন নাকি ৪০ এ আসে। বাবার বললেন এসব খাতা কলমে, উপন্যাসে বাস্তবে এসব ভূয়া কথা। তার একটাই আরজি ডিগ্রী নেও ঠিক আছে, তবে, রনাঙ্গনে নেমে পড়ো সময় থাকতে । এসব ভূয়া কথায় কান দিওনা। বাস্তবে এর কোন নজির নাই। আহ!! এমন বাবা কজনের থাকে!!
একজন মানুষকে কতবার নাখোশ করা যায়। বাবাকে এবার মনে হয় খুশী করতে হবে

Comments

Popular posts from this blog

Statement of Purpose এর নমুনা-13 ( Analytical Chemistry)

Statement of Purpose এর নমুনা-১ ( Organic Chemistry)

আমেরিকার যে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডিতে এপ্লাই করতে জিআরই লাগে না, তার প্রাথমিক তালিকা_১ :