ছাত্র-ছাত্রীর নাম ধরে ডাকা
শিক্ষক-ছাত্র সম্পর্ক (পর্ব-২)
Rejaul Hoq Nayem
আমি যে কতো হতভাগা এটা বুঝতে সময় লাগছে ৫ বছর। আমি তাও বুঝছি। কত ছাত্র তাও বুঝেনা। শিক্ষক মানে বাবা-মা। আমার লেখায় এক কথা বার বার শুনতে চর্বিতে চর্বণের মতো লাগে। ভাবছেন চর্বিত চর্বণ আবার কি জিনিষ। গরু যখন জবর কাটে ঘন্টার পর ঘন্টা একই জিনিষ হাজার কোটি বার চিবায়- এই চিবানো জিনিষকেই বলে চর্বিত চর্বণ।
জনৈক মা/বাবা ক্লাসে এক অমনোযোগী ছাত্রকে ডাকছেন, এই ছেলে, এই ছেলে, এই ছেলে (ঘন ঘন তিনবার ) লাল শার্ট লাল শার্ট। মনে হয় রাস্তার কোন মুরগীওয়ালা বা মাছওয়ালাকে ডাকছেন। আজ ৫-৬ বছর পর ছেলেটি ভাবছে তার মা/বাবা তাকে ছেলে বলে ডেকেছে, তাই ভেবে সে খুশী, তাও একজন অন্তত ছেলে বলে ডেকেছে। আর কেউ কখনো ছেলে তো দূরে থাক নাম ধরেই ডাকেইনি।
জনৈক মা/বাবা ক্লাসে এক অমনোযোগী ছাত্রকে ডাকছেন, এই ছেলে, এই ছেলে, এই ছেলে (ঘন ঘন তিনবার ) লাল শার্ট লাল শার্ট। মনে হয় রাস্তার কোন মুরগীওয়ালা বা মাছওয়ালাকে ডাকছেন। আজ ৫-৬ বছর পর ছেলেটি ভাবছে তার মা/বাবা তাকে ছেলে বলে ডেকেছে, তাই ভেবে সে খুশী, তাও একজন অন্তত ছেলে বলে ডেকেছে। আর কেউ কখনো ছেলে তো দূরে থাক নাম ধরেই ডাকেইনি।
অনেক বাবা-মার আবার শুধু এক সন্তান ছিলো, শুধু ক্লাসের ক্লাসের ফাস্ট বয়, আবার কারো কারো ২-৩ টা ছেলে পুলে ছিল যেমন ফাষ্ট, সেকেন্ড, থার্ড.. ৪৯ জনের বাকীরা অকর্মের ঢেঁকী।
আমার নাম নিয়ে রয়েছে নানা জটিলতা, কেউ বলে MD, কেউ আবার রেজাউল পুরোটা উচ্চারণ করতে পারে না, তাই পার্ডুতে ভর্তির সময় প্রিপারড নাম দিয়েছে রেজা।
প্রফেসর মিঞ্জি ডাই, ইউনিভার্সিটি ওব কলাম্বিয়া থেকে পিএইচডি, হার্ভাড থেকে পোষ্ট ডক, প্রথম দিনে সবার নাম, দেশ সব জিজ্ঞাস করলেন।অ্যাডভান্সড অরগানিক কেমিষ্ট্রি পড়ান, তার ল্যাবে প্রায় ২০ জন গবেষক, মিলিয়ন ডলারের ফান্ড। ৪ মাসে আমার নাম ধরে ডেকেছে অসংখ্য বার। শুধু কি আমার নাম, ক্লাসের ৪২ জনের কোন না কোন ভাবে ডেকেছে বেশ কয়েক বার। আলেকজেন্ডার উই স্পেক্ট্রোস্পকপি পড়াতেন, কাগজে ছাত্রদের নাম লিখে নিয়ে আসতেন, প্রথম কদিন ভুল করলেও চেষ্টা করতেন নাম ধরে ডাকতেন, আমাকে ডাকতেন মুহাম্মদ।
আরো অবাক কান্ড মিঞ্জি দাই এক বছরে ও আমার নাম ভোলে নি। এক বছর পর রাস্তায় দেখে রেজা নামে ডাক আমাকে খুবই অবাক করেছে। আন্ডারগ্রেডের ক্লাসগুলোতে টিচার রা নানাভাবে ছাত্রদের নাম আয়ত্ত করা নিজের চোখে দেখা। শিক্ষক নিজে নাম ধরে ডাকেন আবার টিএ দের ও নাম ধরে ডাকার ব্যাপারে তাগিদ দেন। একজন শিক্ষক তার ছাত্রদের নাম ধরে ডাকার জন্য কতো চেষ্টা। কখনো কাগজে লিখে নিয়ে আসেন, কখনো অ্যাটেন্ডেন্স ট্র্যাক করে নাম ধরে ডাকেন, কখনো ভুলে গেলে সরাসরি জিজ্ঞাস করেন।
আরো অবাক কান্ড মিঞ্জি দাই এক বছরে ও আমার নাম ভোলে নি। এক বছর পর রাস্তায় দেখে রেজা নামে ডাক আমাকে খুবই অবাক করেছে। আন্ডারগ্রেডের ক্লাসগুলোতে টিচার রা নানাভাবে ছাত্রদের নাম আয়ত্ত করা নিজের চোখে দেখা। শিক্ষক নিজে নাম ধরে ডাকেন আবার টিএ দের ও নাম ধরে ডাকার ব্যাপারে তাগিদ দেন। একজন শিক্ষক তার ছাত্রদের নাম ধরে ডাকার জন্য কতো চেষ্টা। কখনো কাগজে লিখে নিয়ে আসেন, কখনো অ্যাটেন্ডেন্স ট্র্যাক করে নাম ধরে ডাকেন, কখনো ভুলে গেলে সরাসরি জিজ্ঞাস করেন।
একজন শিক্ষক তার ছাত্রকে নাম ধরে ডাকলে তার হৃদয়ে যে শিহরণ, আবেগ সৃষ্টি হয় তা ছাত্রটিকে পড়াশোনার ব্যাপারে আরেকটু আবেগী করে তোলে, তা ঐ শিক্ষকের ক্লাসে আরেকটু সিরিয়াস করে তোলে। অমনোযোগী থেকে আস্তে আস্তে মনোযোগী করে তোলে। টিচিং ট্রেনিংয়ে গিয়ে জানতে পারলাম এইটাই ছা্ত্রদের নাম মনে রাখার প্রধান কারণ । আর নাম ধরে ডাকলে ছাত্ররা অভয়ে মন খুলে প্রশ্ন করতে পারে।
আমাদের দেশে শিক্ষক-ছাত্র সম্পর্ক সেরকম নয়। কিছু কিছু শিক্ষককে ছাত্ররা সব সময় সাপের মতো ভয় করে সর্বত্র। একজন শিক্ষক একটা কোর্স পড়ান পুরো বছর ব্যাপী। একটি ক্লাসের অন্তত ১০-১২-১৪ জন ছাত্রের নাম বুঝি মনে রাখা যায় না। মাঝে মাঝে নাম ধরে ডাক দিয়ে পড়া জিজ্ঞাস করলে ও ছেলেটি পরের ক্লাসে লজ্জায় পড়ে আরেকটু মনোযোগী হয়ে উঠে । তাই বিদেশীদের ছাত্রপ্রীতি দেখে বুঝলাম আমি, আমার মতো মিডেল বেঞ্চ থেকে পিছনের বেঞ্চের ছাত্র-ছাত্রীরা যে কতো হতভাগা।
আমাদের দেশে শিক্ষক-ছাত্র সম্পর্ক সেরকম নয়। কিছু কিছু শিক্ষককে ছাত্ররা সব সময় সাপের মতো ভয় করে সর্বত্র। একজন শিক্ষক একটা কোর্স পড়ান পুরো বছর ব্যাপী। একটি ক্লাসের অন্তত ১০-১২-১৪ জন ছাত্রের নাম বুঝি মনে রাখা যায় না। মাঝে মাঝে নাম ধরে ডাক দিয়ে পড়া জিজ্ঞাস করলে ও ছেলেটি পরের ক্লাসে লজ্জায় পড়ে আরেকটু মনোযোগী হয়ে উঠে । তাই বিদেশীদের ছাত্রপ্রীতি দেখে বুঝলাম আমি, আমার মতো মিডেল বেঞ্চ থেকে পিছনের বেঞ্চের ছাত্র-ছাত্রীরা যে কতো হতভাগা।
Comments
Post a Comment